
ইউরোপিয়ান নিউজ প্রধান মোঃ কামরুজ্জামান : যুক্তরাজ্যের লন্ডনে সন্ত্রাসী হামলায় এক সেনা নিহত হয়েছেন। গত বুধবার দুপুরে দক্ষিণ পূর্ব লন্ডনে প্রকাশ্যে রাস্তায় দুই সন্ত্রাসী ছুরিকাঘাতে এই ব্যক্তিকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় লন্ডন জুড়ে আতংক বিরাজ করছে। নিহত ব্যক্তি উলউইচ রয়েল আর্টিলারি ব্যারাকের একজন সেনা সদস্য। বর্বর এই ঘটনার পর লন্ডনের সব ব্যারাকে সতর্কাবস্থা জারি করা হয়েছে। মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে ঘটনাস্থলে পুলিশের গুলিতে এক সন্দেহভাজন নিহত হয়েছে। আহত অপর সন্দেহভাজন চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীসুত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে উলইচের জন উইলসন স্ট্রিটে সংঘটিত এই ঘটনার সময় মিলিটারি চ্যারিটি ‘হেল্প ফর হিরো’ লিখা টি-শার্ট পরিহিত ২০ বছর বয়সের এক যুবককে আক্রমণ করে অপর দুই যুবক। এতে ছুরিকাঘাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি।
হোম সেক্রেটারী টেরেসা মে এই ঘটনাকে সন্ত্রাসী হামলার ইঙ্গিত বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, এই হামলা বৃটেনের বিরুদ্ধে হামলা। তিনি ঘটনার পরপরই ইমারজেন্সী রেসপন্স টিম কোবরা-র সাথে বৈঠক করেছেন। লন্ডনের সব ব্যারাকের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টেরেসা মে জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনী এমআই-ফাইভ ও মেট্রোপলিটন পুলিশ তাঁকে জানিয়েছেন, হামলায় একজন নিহত হয়েছেন। পুলিশের গুলিতে দুজন হামলাকারী আহত হয়েছেন। তাঁদের চিকিত্সা চলছে।
লন্ডনের ওই এলাকার পার্লামেন্টের সদস্য নিক রেইন্সফোর্ড জানান, হামলায় নিহত ব্যক্তিটি উলউইচ সেনানিবাসের একজন সেনাসদস্য। তবে এটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জেমস বলেন, টি-শার্ট পরিহিত একজনের ওপর দুজন হামলা করেন। তাঁরা তাঁকে টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় ফেলে দেন। দুই হামলাকারী ও হামলার শিকার ব্যক্তির বয়স প্রায় ২০ বছর হবে।
ফ্রান্স সফররত বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন সফর সংক্ষিপ্ত করে বুধবার রাতেই লন্ডন ফিরেছেন। আজ (বৃহস্পতিবার) তিনি কোবরা-র সাথে বৈঠক পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবেন। এই হত্যাকান্ডকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে মনে করছেন ক্যামেরন । যেকোন সন্ত্রাসী তৎপরতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এই ধরণের হামলার পর বৃটেন কখনও চুপ করে বসে থাকবে না।
রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এই ঘটনা শুনে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাকে ঘটনাটি সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট করা হচ্ছে। লন্ডন মেয়র বরিস জনসন তার টুইটার বার্তায় বর্বর ঘটনাটিকে অসুস্থ, প্রতারণামূলক এবং ক্ষমার অযোগ্য সন্ত্রাসী কাজ বলে মন্তব্য করেছেন। লেবার লিডার এড মিলিবান্ড টুইটারে লিখেছেন, এই ঘটনায় আমি মর্মাহত। গোটা দেশ আতংকিত। মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন এক বিবৃতিতে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে একে অত্যন্ত নৃশংস উল্লেখ করে।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন