সিলেট ভুমিঃ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মামলার কার্যক্রম বুধবার শেষ হচ্ছে। মামলার পক্ষে-বিপক্ষে সাক্ষ্যপ্রদান, যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মঙ্গলবার আইনি পয়েন্ট পেশ শেষ করেছেন আসামিপক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। দুপুর ৩-৩০ মিনিটের সময় মুজাহিদের পক্ষে ল’পয়েন্ট উপস্থাপন শেষে ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা করে আসামিপক্ষের শুনানি শেষ করেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষে পাল্টা আইনি ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ আদালতে বিভিন্ন যুক্তি উপস্থাপন করেন। বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ ব্যারিস্টার রাজ্জাকের আইনি পয়েন্ট পেশ শেষে প্রসিকিউশন তাদের পাল্টা ব্যাখ্যা করেন। আইনসম্মতভাবে ল’পয়েন্ট পেশ ও রাষ্ট্রপক্ষের ব্যাখ্যা দেয়ার পর মামলার কার্যক্রম শেষ করে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ করে সিএভিতে রাখা হয়। সে হিসেবে আগামীকাল প্রসিকিউশনের আইনি ব্যাখ্যা শেষে মুজাহিদের মামলায় রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হবে মর্মে আদেশ দেয়া হতে পারে।
আদালতে আাসামিপক্ষের দেয়া আইনি পয়েন্ট ব্যাখ্যা করার জন্য প্রসিকিউশনকে সময় দেয়া হলে প্রসিকিউটর মোখলেছুর রহমান বাদল দাঁড়িয়ে বলেন, আমাদের পক্ষে প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ সকল বিষয়ে ব্যাখ্যা করবেন। তখন আদালত বলেন, আজ শেষ করে দেন। উত্তরে বাদল বলেন, আজ আধ ঘণ্টা করবো। তারপর প্রস্তুতি নিয়ে আগামীকাল এক ঘণ্টার মধ্যে শেষ করে দেবো।
আদালত বলেন, কালকে শুধু শুধু মুজাহিদকে কষ্ট করে আবার আসতে হবে। এরপর সদস্য বিচারক মো. শাহিনুর ইসলাম তুরিন আফরোজকে বলেন, দুইটা প্রশ্ন আপনাকে বলছি লিখে নিয়ে সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিবেন। ১. মুজাহিদের বিরুদ্ধে আনীত ১নং অভিযোগে কিভাবে তাকে অভিযুক্ত করা যাবে। ২. অভিযোগ-৬ এ কিভাবে মুজাহিদকে হত্যা, গণহত্যায় সহযোগিতার বিষয়ে অভিযুক্ত করা যাবে।
অতঃপর তুরিন আফরোজ প্রায় বিশ মিনিট আসামিপক্ষের দেয়া যুক্তির ব্যাখ্যা করেন। এরপর আগামীকাল পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম মুলতবি করা হয়। তুরিন বলেন, আসামিপক্ষের বলা হার্ড ইভিডেন্স (প্রমাণাদি) বলতে কোনো কিছু আছে বলে আমি কখনো শুনিনি। গত ২ জুন রবিবার হতে মুজাহিদের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ল’পয়েন্ট উপস্থাপন শুরু করে আজ শেষ করেন আসামিপপক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।
উল্লেখ্য, গত ৭ থেকে ১৬ মে পর্যন্ত মোট চারদিন রাষ্ট্রপক্ষ মুজাহিদের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে গত ২৬ আগস্ট থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকসহ মোট ১৭ জন জবানবন্দি দেন। অপরদিকে মুজাহিদের পক্ষে প্রথম এবং একমাত্র সাফাই সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন তার ছোট ছেলে আলী আহমেদ মাবরুর। গত ২২ এপ্রিল প্রসিকিউশনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলে আসামিপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৫ মে দিন ধার্য করে দেন ট্রাইব্যুনাল। গত ২১ জুন মুজাহিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ৭টি অভিযোগে চার্জ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন