.bangla { font-family: SolaimanLipi, Rupali, "Times New Roman", Serif, Vrinda; font-size: 15pt; }
Blogger Widgets

০৫ অক্টোবর, ২০১৩

আন্দোলন না নির্বাচন : কোন পথে বিএনপি

Sylhet Aliya Madrasa Stage for Khaleda

সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে খালেদা জিয়ার ৫ অক্টোবরের জনসভার জন্য প্রস্তত মঞ্চ



হাবিবুর রহমান তাফাদারঃ দেশে ধারাবাহিক কর্মসূচীর অংশ হিসেবে এখন সিলেটে বিরোধীদলীয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ‘সরকার হটিয়ে দেশ বাঁচানোর শ্লোগান’ নিয়ে তত্ববধায়ক সরকার দাবিতে আজ তিনি বক্তব্য দেবেন নগরীর আলিয়া মাদ্রসা মাঠের জনসভায়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি ও তার শরিক দলগুলো আন্দোলন করে আসছে তিন বছর ধরে। কিন্তু তাদের সেই আন্দোলন সরকারের টনক নড়াতে পারেনি, বরং যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে জামায়াত-শিবির দেশজুড়ে যে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে- তার দায় বিএনপির ঘাড়েও পড়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদ ফুরিয়ে আসার সাথে সাথে ১৮দলীয় জোট এখন দুই সুরে কথা বলছে। আর তা হচ্ছে নির্বাচন ও তত্বাবধায়ক সরকার ইস্যু।

বেগম খালেদা জিয়া গত ২৯ সেপ্টেম্বর খুলনার জনসভায় বলেছেন, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশ তো নেবেই না; এমন প্রহসনের নির্বাচন প্রতিহত করবে। একই সঙ্গে তিনি দেশ বাঁচানোর জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে হটানোর কথা বলেছেন। তাঁর এই বক্তব্য দ্ব্যর্থবাচক। একটি সরকার তা নির্বাচিত হোক বা অনির্বাচিত, গণতান্ত্রিক হোক বা অগণতান্ত্রিকতাকে হটানোর দুটো উপায় রয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা জানান। আর তা হচ্ছে- গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করা ও নির্বাচনের মাধ্যমে পরাজিত করা। প্রখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে বিএনপি কোন পথ বেছে নেবে?

প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এখন নির্বাচনমুখী, না আন্দোলনমুখী এই প্রশ্ন এখনো অমীমাংসিত। দলের নেতা-নেত্রীদের বক্তৃতা-বিবৃতি দেখেশুনে কখনো মনে হয়, তাঁরা ক্ষমতার দরজায় পৌঁছে গেছেন। আবার কখনো মনে হয়, তারা হতাশ ও ভীত হয়ে পড়েছেন। বিএনপির নেতারা কখনো উজ্জীবিত, কখনো তাঁদের কণ্ঠে হতাশার সুর।

নির্বাচন ও আন্দোলন নিয়ে বিএনপি’র নেতানেতৃরা দারুণ দোটনায় আছে, সেটি দলের তৃনমূল নেতানেত্রী ও কর্মীদের চলনবলনে প্রতীয়মান হয়। অনেকের মতে, যেহেতু জনসমর্থন বিএনপি’র পক্ষে রয়েছে, সেহেতু যেকোনো অবস্থায় নির্বাচনে যাওয়া উচিত। নির্বাচনে না গেলে ২০০৭ সালের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে। কিন্তু রাজনৈতিক বোদ্ধাদের মতে, সরকারের ফাঁদে কোনোভাবেই পা দেওয়া ঠিক হবে না। এই মুহূর্তে নির্বাচনের কথা না ভেবে কঠোর আন্দোলনে নামতে হবে, যাতে সরকার তত্ত্বাবধায়ক না হলেও নির্দলীয় সরকারের দাবি মানতে বাধ্য হয়।

অনেকের মতে, এখন বিএনপি যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে, তাতে হারানোর কিছু নেই। ২০০৮ সালে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল বলেও মনে করে তারা। তখন বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচনে যাওয়ার বিরোধী ছিল। কিন্তু জামায়াত ও দলের নরমপন্থী অংশের তাগিদেই শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়।

এখন বিএনপির নরম ও গরম উভয় পন্থী একটি ব্যাপারে নিশ্চিত যে দাবি আদায়ে সরকারকে বাধ্য করতে হলে এতদিন যে পদ্ধতিতে আন্দোলন হয়েছে, সেই পদ্ধতি কাজে লাগবে না। সর্বাত্মক আন্দোলনে নামতে হবে। বিশ্বস্ত সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যমতে বিএনপির প্রধান বেগম খালেদা জিয়া ও তাঁর ছেলে তারেক রহমান সেই সর্বাত্মক আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন দলীয় নেতা-কর্মীদের। তারেক রহমানের মূলকথা হলো, আগে দাবি আদায়, তারপর নির্বাচন।

এখানে প্রশ্ন হচ্ছে সরকার হটানো আন্দোলন করতে বিএনপির নেতারা প্রস্তুত আছেন কি না। বিএনপির নেতাদের ভাষাভঙ্গি ও আচরণে আন্দোলনের কঠিন-কঠোর পথের চেয়ে নির্বাচনী আমেজই বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠছে। নির্বাচন নিয়ে বিএনপি দলীয়ভাবে এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা যেসব জরিপ করেছে, তাতে বিএনপির জয়ের সম্ভাবনার কথাই বলা হয়েছে। এ অবস্থায় বিএনপির নেতারা মুখে যা-ই বলুন, ভেতরে ভেতরে নির্বাচনের প্রস্তুতিই নিচ্ছেন। বিভিন্ন স্থানে অনানুষ্ঠানিক প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ চলছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। এমনকি কেউ কেউ নিজেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবেও ঘোষণা করেছেন, রঙিন পোস্টার ছেড়েছেন। সিলেটের গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার আসনসহ একাধিক আসনে অনেক প্রার্থী শুধু পোস্টার-ব্যানার নয়, কালো টাকার ছড়াছড়িও শুরু করে দিয়েছেন।

বেগম খালেদা জিয়া ইতিমধ্যে নরসিংদী, বগুড়া ও খুলনায় যে জনসভা করেছেন, তাতেও নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে নির্বাচনী আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। তিনি যেখানেই যাচ্ছেন, সেখানে শত শত তোরণ নির্মাণ করা হচ্ছে, রংবেরঙের পোস্টার-ফেস্টুন টাঙানো হচ্ছে। এ রকম তোরণ-ফেস্টুন দিয়ে সিরকার পতনের আন্দোলন করা যায় কি?

জনমনে এখনও প্রশ্ন রয়েছে বিএনপি আসলে কোন পথে যাবে? নির্বাচন না আন্দোলন। আওয়ামীলীগের একাধিক নেতা বক্তৃতা বিবৃতিতে বলেছেন বিএনপি সবার আগেই নির্বাচনে আসবে। অতীতে বিভিন্ন সময় বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কথা বললেও পুনরায় নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। অনেকগুলোতে জয়লাভও করেছে। তাছাড়া সরকারের অনেক মন্ত্রীদের পরিষ্কার কথা, কঠোর আন্দোলন করা বা দাবি আদায়ের আন্দোলন করার শক্তি বিরোধী দলের নেই।

খুলনার জনসভায় খালেদা জিয়া সরকারের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে সিভিল প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তা চেয়েছেন। তিন দশকেরও বেশি রাজনীতিতে অভিজ্ঞ নেত্রী নিশ্চয়ই জানেন, ইতিপূর্বে কোনো আন্দোলনেই সিভিল প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এগিয়ে আসেননি। বরং তাঁরা সরকারের হয়ে বিরোধী দলের আন্দোলন দমন করতেই সচেষ্ট থেকেছে। এটি বর্তমান সরকারের আমলে যেমন সত্য, তেমনি সত্য বিএনপি আমলের জন্যও। বেগম খালেদা জিয়ার মনে থাকার কথা, ১৯৯০ সালের গণ-আন্দোলনের সময়ও সিভিল প্রশাসন কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেননি। তবে এ ক্ষেত্রে বিএনপির নেতারা ১৯৯৬ সালের আওয়ামী লীগের উদ্যোগে তৈরি জনতার মঞ্চের উদাহরণটি টানতে পারেন। কিন্তু তাঁদের মনে থাকার কথা, সেই জনতার মঞ্চ তৈরি হয়েছিল ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের পর। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার অনুরূপ একটি প্রহসনমূলক ও একতরফা নির্বাচন করলেই কেবল বিএনপির নেতাদের কথায় সিভিল প্রশাসনের রাস্তায় নেমে আসার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে; তার আগে নয়। কিন্তু আওয়ামীলীগের কথামত বিএনপি যদি আন্দোলন আন্দোলন খেলা করে পরিশেষে নির্বাচনে অংশ নেয়, তাহলেতো গন আন্দোলন স্বপ্নই থেকে যাবে।

বিএনপির চেয়ারপারসন প্রতিটি জনসভায় জনগণকে আন্দোলনে অংশগ্রহণের আহ্বানের পাশাপাশি নির্বাচনে বিজয়ী হলে কী করবেন, তারও বিস্তারিত বয়ান দিচ্ছেন। আপনারা যদি নির্বাচনেই না যাবেন, তাহলে নির্বাচনের পর সরকারের ধরন-কাঠামোর গল্প জনগণকে শুনিয়ে লাভ কী? আর নির্বাচন যদি না-ই হবে, তাহলে মার্কিন কূটনীতিকই বা কেন লন্ডনে ছুটে যাবেন বিএনপির দ্বিতীয় প্রধান নেতা তারেক রহমানের কাছে।

বেগম খালেদা জিয়া বক্তৃতা-বিবৃতিতে এখন দুটি বিষয়ের ওপর জোর দিচ্ছেন, নির্বাচনের আগে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া ও শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে না যাওয়া। আর ক্ষমতাসীনেরা নির্বাচনকালীন সরকারের যে প্রস্তাব দিচ্ছে, তা ১৯৯৫-৯৬ সালে বিএনপির দেওয়া প্রস্তাবেরই অনুরূপ। প্রশ্ন হলো, বর্তমান বিরোধী দল সেটি মানবে কি না, নাকি তারা একদফা অর্থাৎ শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন নয় এ সিদ্ধান্তে অনড় থাকবে?

তত্বাবধায়ক বা নির্দদীয় সরকারের দাবী দেশের প্রতিটি নাগরীকের। এমনকি সরকারদলীয় অনেক নেতাকর্মীরও দাবি নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকার। বিভিন্ন কারনে গোটা জাতির সমর্থন এ দাবির প্রতি। কিন্তু যে কোন কারনে বিরোধী দল যদি সরকারের অধীনে নির্বাচনের ফাদে পা ফেলে, তাহলে এর চেয়ে আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত বিএনপি’র পক্ষে আর কি হতে পারে। তার চেয়ে বরং নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষনা দিয়ে দেশ ও জাতিকে অতি শিঘ্র মুক্তি দিয়ে দেয়া উচিৎ।






বিস্তারিত... http://surmatimes.com/2013/10/04/36248.aspx/





via Sylhet News | সুরমা টাইমস http://feedproxy.google.com/~r/surmatimes/~3/hawoWc-fDoA/

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 

সাম্প্রতিক সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

সাম্প্রতিক সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এস,এম, জহুরুল ইসলাম, দৈনিক সিলেট ভুমি কার্যালয়:- ইদ্রিছ মার্কেট-১৪/২,সিলেট-৩১০০ থেকে প্রকাশিত। Email: sylhetbhumi2013@gmail.com, Mobile: 01714-674551, .সর্ব স্বত্ব সংরক্ষিতঃ দৈনিক সিলেট ভুমি-২০১৩।> Copyright ©> Sylhet News-Sylhet Bhumi Design by DINAR-01717092424 | Theme by Sylhet Bhumi | Powered by Sylhet Bhumi